বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার সান্তাহার রেলওয়ের বায়তুল আমিন জামে মসজিদের সামনের সীমানা প্রাচীরে তালা দিয়ে রেখেছে রেলওয়ে কতৃপক্ষ। মসজিদের সামনের এই দরজায় তালা দেওয়াই নামাজে যেতে বিপাকে পড়তে হচ্ছে মুসুল্লিদের। পাশাপাশি ঐ মসজিদে চালু রয়েছে মসজিদ ভিত্তিক শিশু গণশিক্ষা কার্যক্রম। যেখানে অর্ধ-শতাধিক শিশু ইসলামিক শিক্ষা গ্রহণ করছে। তারাও কিছুটা ঝুঁকি নিয়ে বিকল্প পথে যাচ্ছে মসজিদে।
স্টেশন কলোনি বাসিন্দাদের সুত্রে যায় গেছে, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় রেলওয়েতে নাশকতার মূলক কোনো ঘটনা যাতে না ঘটে সেই কারণে সান্তাহার জংশন স্টেশনের রেলওয়ে বায়তুন আমিন জামে মসজিদের সামনের সীমানা প্রাচিরের প্রবেশের একটি দরজায় তালা দেয় রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহীনি ও রেলওয়ে পুলিশ। তবে সেই সীমানা প্রাচীররের ৫০ মিটার দূর থেকে ফাঁকা জায়গা। আর এই ৫০ মিটারের জন্য মুসল্লিদের প্রায় অনেকটা পথ ঘুরে নিরাপত্তা ব্যারাকের পাশ দিয়ে আসতে হয়।
জানা গেছে , পৌর শহরের হার্ভের মোড় এলাকা ও তার আশেপাশে কাছে কোথাও মসজিদ না থাকায় ঐ এলাকার মুসল্লিরা রেলওয়ে মসজিদে নামাজ পড়তে যায়। তবে নির্বাচনের আগে মসজিদের সামনে দরজায় তালা দেওয়াই অনেক বয়স্ক ব্যাক্তি নামাজে আসতে পারছে না। আবার যারা নামাজে আসছে তাদেরকে নামাজ পড়ার জন্য নানা দিক দিয়ে ঘুরে আসতে হচ্ছে।সান্তাহার হার্ভে মোড় এলাকার মুসল্লি আব্দুল মতিন বলেন, আমার এলাকায় কোনো মসজিদ না থাকায় আমি এবং আমার এলাকার বেশি ভাগ মুসল্লিরা পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়তে রেলওয়ের এই মসজিদে আসি। তবে নির্বাচনের আগে নাশকতার আশংকায় এই মসজিদেও সামনের সীমানা প্রাচীরের গেইটে তালা দেয় রেলওয়ে পুলিশ। আমরা মুসল্লিরা নির্বাচনের পর একাধিক বার রেলওয়ে থানায় গেলেও তারা তালা খুলে দিবে বলেও খুলে দিচ্ছে না। এই দরজায় তালা দেওয়ার কারণে আমাদের অনেকটা পথ ঘুরে মসজিদে আসতে হচ্ছে। অনেক বয়স্ক ব্যাক্তিরা এখন আর এই মসজিদে আসতে পারছে না দরজায় তালা দেওয়া থাকার কারণে। বাধ্য হয়েই বাড়িতে নামায পড়ছে তারা।সান্তাহার পৌর শহরের স্টেশন কলোনী এলাকার শামীম হোসেন নামের এক মুসুল্লি বলেন, নির্বাচনের আগে রেলওয়ে থানার পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা এসে এই দরজায় তালা দিয়েছে। নির্বাচনের পরর্বতীতে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি সহ মুসল্লিরা থানায় গিয়ে গেইট খোলার কথা বলা হয়েছিল। তবে তারা এখনো এই দরজা খুলে দেয় না।
সান্তাহার বি.পি. উচ্চ বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক ও স্থানীয় বাসিন্দা আহসান তালুকদার বলেন, এখানে নামাজের পাশাপাশি মসজিদ ভিত্তিক গণশিক্ষা কার্যক্রম চালু রয়েছে। যেখানে প্রায় অর্ধ-শতাধিক শিশুরা ইসলামিক শিক্ষা গ্রহণ করে। এই রাস্তা বন্ধ থাকায় এইসব শিশুদের নানা দিক ঘুরে মসজিদে আসতে হয়। এবং রাস্তা বন্ধ থাকায় তাদের ঘুরে আসা কিছুটা ঝুঁকিপূর্ন।
এ ব্যাপারে সান্তাহার রেলওয়ের বায়তুন আমিন জামে মসজিদের সভাপতি ও সান্তাহার রেলওয়ে ঊর্ধ্বতন উপ-সহকারী প্রকৌশল (কার্য) বিভাগের প্রকৌশলী আব্দুর রহমান বলেন, আমাদের রাজশাহী অফিস থেকে নির্দেশনা আছে ঐ রাস্তাটি বন্ধ করে দেওয়ার জন্য। আমি তালা খুলতে পারবো না। যদি এই মসজিদে নামাজে আসতে হয় তাহলে আরএনবি ব্যারাকের পাশ দিয়ে আসতে হবে।
সান্তাহার রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর পরিদর্শক নূর এ নবী বলেন, যদি মসজিদ কমিটি ফজরের নামাজের সময় দরজা খোলে এবং এশার নামাজের পর দরজায় তালা দেই তাহলে ঔ গেইটের তালা খুলে দেওয়ার একটা ব্যবস্থা করা যেতে পারে।এ বিষয়ে সান্তাহার রেলওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ মোক্তার হোসেন বলেন, আমার জানা মতে দরজার তালা খুলে দেওয়ার কথা। তবে যদি না খুলে দেয় তাহলে আমি রেলওয়ে অফিসে কথা বলে তালা খুলে দেওয়ার ব্যবস্থা করবো।
Leave a Reply