বগুড়ার শেরপুরে মামুরশাহী দাখিল মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটি গঠনে অনিয়ম ও জালিয়াতির অভিযোগ উঠেছে। মাদ্রাসার শিক্ষার্থী-অভিভাবকদের উপস্থিতি ছাড়াই কাগজে-কলমে নির্বাচন দেখিয়ে কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় মনোনয়নপত্র উত্তোলন ও জমা দেওয়ার সময় শেষ হওয়ার দশদিন পর নোটিশ বোর্ডে সাটানো হলো নির্বাচনের তফসিল।
শনিবার (২৭ এপ্রিল) বিষয়টি জানাজানি হওয়ার মাদ্রাসার শিক্ষক-শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও এলাকাবাসীর মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে। যা যে কোনো সময় ভয়াবহ রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে রুপ নিতে পারে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে। এদিকে বিক্ষুব্ধরা দ্রুত ওই ভুয়া নির্বাচন বাতিল করে পুনঃতফসিল ঘোষণার দাবি জানিয়েছেন। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলার শাহবন্দেগী ইউনিয়নের মামুরশাহী গ্রামে স্থানীয় শিক্ষানুরাগী ব্যক্তিরা মামুরশাহী দাখিল মাদ্রাসাটি প্রতিষ্ঠা করেন।
বর্তমান মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির মেয়াদ আগামি জুনে শেষ হবে। তাই নিয়ম অনুযায়ী তিনমাস আগে থেকেই প্রতিষ্ঠান পরিচালনা কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া শুরু করেন মাদ্রাসা সুপার মাওলানা আমিনুল ইসলাম। তবে সম্পুর্ণ গোপনে এই কাজটি করছেন তিনি। নিজের পছন্দের লোকদের কমিটির সদস্য বানাতে কাগজে-কলমে নির্বাচন প্রক্রিয়া শুরু করেছেন।
অভিযোগ রয়েছে, মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটি গঠনের জন্য ভোটার তালিকা থেকে শুরু করে নির্বাচনী তফসিল সবকিছুই করা হয়েছে সম্পুর্ণ গোপনে। সুপারের পছন্দের লোক ছাড়া যেন কেউ নির্বাচনে অংশ নিতে না পারেন সেজন্য ঘোষিত তফসিলের মনোনয়নপত্র উত্তোলন ও জমা দেওয়ার সময় শেষ হওয়ার (১৭এপ্রিল) দশদিন পর শনিবার (২৭ এপ্রিল) সকালে মাদ্রাসার নোটিশ বোর্ডে সাটানো হয় নির্বাচনের তফসিল।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মাদ্রাসার একাধিক শিক্ষক বলেন, কবে কীভাবে কমিটির সদস্য নির্বাচন হচ্ছে তা আমরা জানি না। এমনকি শিক্ষক প্রতিনিধি নির্বাচনের বিষয়টিও জানা নেই। তাই তাদের কোনো মতামত ও ভোট নেওয়া হয়নি বলে জানান তারা।
মেয়াদ উর্ত্তীণ হওয়া কমিটির সভাপতি আবু তালেব আকন্দ বলেন, শুনেছি কমিটি হচ্ছে। কিন্তু সেটি কোন প্রক্রিয়ায় করা হচ্ছে তা বলতে পারবো না। তবে অভিভাবকসহ সবার মতামত নিয়ে মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটি গঠন করা উচিত বলে মন্তব্য করেন তিনি।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ নজরুল ইসলাম বলেন, কমিটির সদস্য নির্বাচনে অনিয়ম ও জালিয়াতির বিষয়ে লিখিত কোনো অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মামুরশাহী দাখিল মাদ্রাসা সুপার মাওলানা আমিনুল ইসলাম বলেন, প্রতিষ্ঠান ছুটি থাকায় নির্বাচনের বিষয়টি বেশি প্রচার-প্রচারণা করা সম্ভব হয়নি। এছাড়া কমিটিতে আসার জন্য তেমন কোনো লোকই খুঁজে পাই না, তাই প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে কী-লাভ?
Leave a Reply