শেরপুরে খাজনার নামে আলু ক্ষেতেই চাঁদা আদায়!

Reporter Name
    সময় : বৃহস্পতিবার, ফেব্রুয়ারি ১৫, ২০২৪, ২:১৪ অপরাহ্ণ
  • ২০৪ Time View

শেরপুর (বগুড়া) প্রতিনিধি: বগুড়ার শেরপুরে আলু চাষী ও ব্যবসায়ীদের জিম্মি করে খাজনার নামে চাঁদাবাজির অভিযোগ উঠেছে। এমনকি আলু ক্ষেতেই উৎপাদিত ফসলের চাঁদা নেওয়া হচ্ছে। সেইসঙ্গে সরকার নির্ধারিত খাজনার পরিবর্তে ইচ্ছেমাফিক আদায় করা হচ্ছে খাজনা।

চাষী ও ব্যবসায়ীদের ভয়-ভীতি দেখিয়ে আলুবোঝাই ট্রাক আটকে খাজনার নামে তিন থেকে চার হাজার করে টাকা আদায় করছে সংঘবদ্ধ একটি চাঁদাবাজ চক্র। বিষয়টি স্থানীয় প্রশাসনকে জানানো হলেও কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না বলেও অভিযোগ করেন সংশ্লিষ্ট ভুক্তভোগীরা।

মঙ্গলবার (১৩ফেব্রুয়ারি) বিকেলে শহরের দুবলাগাড়ী বাজার এলাকায় অবস্থিত একটি কমিউনিটি সেন্টারে আয়োজিত আলু ব্যবসায়ী সমিতির বার্ষিক আলোচনাসভায় প্রধান অতিথি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সুমন জিহাদীর নিকট আলু চাষী ও ব্যবসায়ীরা এসব অভিযোগ করেন।

সমিতির শেরপুর উপজেলা শাখার সভাপতি শাহ আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন শেরপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) শাহাদৎ হোসেন, বগুড়া জেলা আলু ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি শাহাদত হোসেন, সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান আলী, আ.লীগ নেতা রেজাউল করিম রেজা, সাংবাদিক মো. আইয়ুব আলী প্রমুখ। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর আলম চয়ন।

সভায় আলুচাষী আলহাজ¦ মোকাল্লেম হোসাইন অভিযোগ করে বলেন, বিগত বছরগুলোতে তাদের উৎপাদিত ফসল (আলু) হিমাগারে নেওয়ার সময় কোনো খাজনা দিতে হয়নি। কিন্তু এবার আগে থেকেই তাদের নিকট থেকে খাজনার নামে চাঁদা আদায়ে মাঠে নেমেছেন চক্রের সদস্যরা। এছাড়া আগাম জাতের লাগানো আলু তুলে বিক্রি শুরু করেছেন। এসব আলুর বস্তা প্রতি পঞ্চাশ থেকে ষাট টাকা হারে খাঁজনা নেওয়া হচ্ছে। সে অনুযায়ী প্রতিটি ট্রাক থেকে তিন থেকে চার হাজার করে টাকা নেওয়া হচ্ছে। এক্ষেত্রে সরকার নির্ধারিত নিয়মের কোনো কিছুই মানা হচ্ছে না। এমনকি হাটবারে নির্ধারিত দিনে নির্দিষ্ট সীমানার মধ্যে খাজনা আদায়ের বিধান থাকলেও সেটি উপেক্ষা করে ফসলি মাঠে গিয়ে এবং বাড়ি বাড়ি গিয়ে খাজনার নামে চাঁদা আদায় করা হচ্ছে। একই অভিযোগ করেন চাষি সোলায়মান আলী, হাফিজুর রহমানসহ একাধিক ব্যক্তি।

ব্যবসায়ী আব্দুস শাফী জানান, সড়কে প্রতিটি আলু বোঝাই ট্রাক আটকে চাঁদার রশিদ দেখা হয়। রশিদ দেখাতে না পারলে ইচ্ছেমতো টাকা দাবি করে বসেন চাঁদাবাজরা। তাদের দাবিকৃত টাকা দিতে অস্বীকার করলে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করার পাশাপাশি জোরপূর্বক টাকা-পয়সা ছিনিয়ে নিচ্ছে তারা। এমন পরিস্থিতি অব্যাহত থাকলে তাদের পক্ষে আলু কেনা সম্ভব হবে না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

সভায় উপস্থিত আলু চাষী ও ব্যবসায়ীদের এমন অভিযোগ সম্পর্কে বক্তব্য দিতে গিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সুমন জিহাদী বলেন, আলু মৌসুম আসন্ন। এই পণ্যটি নিয়ে কোনো কারসাজি মেনে নেওয়া হবে না। সিন্ডিকেট করে হিমাগারে আলু মজুদ করে দাম বাড়ানো যাবে না বরং সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে রাখতে হবে। এক্ষেত্রে সরকারের সংশ্লিষ্টরা কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সর্তক রয়েছেন। পাশাপাশি চাষী ও ব্যসায়ীদের জিম্মি করে চাঁদাবাজি ও হয়রানী করার প্রমাণ পেলে আইন অনুযায়ী পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ারী দেন এই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved ©  doiniksatmatha.com