আসন্ন বগুড়ার শেরপুর উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে না বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী সমর্থিত শেরপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশ নিতে ইচ্ছুক প্রার্থীরা। ইতিমধ্যেই ব্যাপক প্রচার প্রচারণা শুরু করলেও কেন্দ্রীয় সংগঠনের সিদ্ধান্তে তারা এ নির্বাচন থেকে সড়ে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। দলীয় একাধিক সূত্র এবং নির্বাচনে অংশ নিতে ইচ্ছুক প্রার্থীরা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। চতুর্থ ধাপে আগামী ৫ জুন শেরপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।
শেরপুর উপজেলা জামায়াতের দলীয় সূত্রে জানা যায়, আসন্ন শেরপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে কেন্দ্রীয় ভাবে সিদ্ধান্ত না হলেও স্থানীয় সংগঠনের সিদ্ধান্তে তিনটি পদেই নির্বাচনের জন্য প্রার্থী চূড়ান্ত করা হয়েছিল। উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আলহাজ¦ মাওলানা দবিবুর রহমান, পুরুষ ভাইস চেয়ারম্যান পদে সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান এ্যাডভোকেট আব্দুল হালিম ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে লুৎফুন ইসলামকে মনোনীত করা হয়েছিল। এরই অংশ হিসেবে তারা নির্বাচনী প্রচার প্রচারণাও শুরু করেন।
ঈদকে কেন্দ্র করে চেয়ারম্যান পদে মনোনীত প্রার্থী সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ মাওলানা দবিবুর রহমান উপজেলা জুড়ে শুভেচ্ছা পোস্টারও লাগিয়েছিলেন। বিভিন্ন দলীয় ও সামাজিক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করে নিজের পক্ষে সমর্থন আদায়ে গণসংযোগ চালিয়েছেন। তবে সংগঠনের কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত জানতে পেরে তিনি সকল প্রচার প্রচারণা স্থগিত করেছেন। তিনি জানান, জামায়াত ইসলামী সর্বদা নির্বাচনমুখি গণ মানুষের সংগঠন। কিন্তু দেশে সুষ্ঠু নির্বাচনী পরিবেশ না থাকায় কেন্দ্রীয় সংগঠন নির্বাচন প্রত্যাখান করেছে। তিনিসহ দলের সকল পর্যায়ের নেতাকর্মী সংগঠনের প্রতি আনুগত্যশীল। সংগঠনের কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। সংগঠন যখন যে সিদ্ধান্ত দেবে তাই মেনে নিব। তাই কেন্দ্রীয় সংগঠনের নির্দেশে তিনি এ নির্বাচন থেকে সড়ে দাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানান জামায়াত নেতা দবিবুর রহমান। ভাইস চেয়ারম্যান পদে জামায়াতে ইসলামী মনোনীত প্রার্থী এ্যাডভোকেট আব্দুল হালিম জানান, স্থানীয় সংগঠনের নির্দেশে তিনি নির্বাচনে অংশ নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। কেন্দ্রীয় সংগঠনের নির্দেশে তিনি নির্বাচন থেকে সড়ে দাঁড়িয়েছেন।
এদিকে এ নির্বাচনকে সামনে রেখে সরকারি দল আওয়ামীলীগের একাধিক প্রাথী মাঠে নেমেছেন। জাতীয় নির্বাচনের পর থেকেই উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেয়ার জন্য প্রচারণায় নেমেছেন তারা। বিরোধী দলের পক্ষ থেকে নির্বাচন প্রত্যাখান করায় তারা ফুরফুরে মেজাজে রয়েছেন। উপজেলা জুড়ে রঙিন শুভেচ্ছা পোস্টার লাগিয়েছেন। এককভাবে নির্বাচনে অংশ নেয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। সাধারণ ভোটার ও দলের স্থানীয় নেতৃবৃন্দের সমর্থন আদায়ের চেষ্টা করছেন। বিভিন্ন সভা সমাবেশ ও সামাজিক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করে ভোট প্রার্থনা করছেন। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত গণসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন তারা।
শেরপুর উপজেলা পরিষদের আসন্ন নির্বাচনে এককভাবে চেয়ারম্যান পদে অংশ নেয়ার জন্য প্রচারণায় নেমেছেন উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ সভাপতি ও বর্তমান ভারপ্রাপ্ত উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ শাহজামাল সিরাজী, উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক সুলতান মাহমুদ ও উপজেলা যুবলীগের সভাপতি তারিকুল ইসলাম তারেক।
অন্যদিকে ভাইস চেয়ারম্যান পদে অংশ নেয়ার জন্য প্রচারণায় নেমেছেন উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ সভাপতি ও সাপ্তাহিক আজকের শেরপুর পত্রিকার সম্পাদক মুনসী সাইফুল বারী ডাবলু, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ও উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের সাধারণ সম্পাদক নূরে আলম সানি, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা সাদ্দাম হোসেন, ছাত্রলীগ নেতা রনি সরকার, গাড়ীদহ ইউনিয়ন আ.লীগ নেতা তাজুল ইসলাম কিরণ প্রমুখ।
উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা চেয়ারম্যান পদে নির্বাচনে অংশ নিতে ইচ্ছুক সুলতান মাহমুদ জানান, উপজেলা পরিষদ নির্বাচন একটি স্থানীয় সরকার নির্বাচন। এখানে কেন্দ্রীয়ভাবে দল থেকে কাউকে মনোনয়ন দেয়া হবে না। তবে স্থানীয় নেতাকর্মীদের প্রত্যাশা ও দলের দায়িত্বশীল পদে থেকেই তিনি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবেন। উপজেলা ও ইউনিয়ন সংগঠনের নেতাকর্মীরাও তার সাথে আছেন। এ কারণে তিনি নির্বাচনে জয়ের বিষয়ে শতভাগ আশাবাদী।
Leave a Reply