বগুড়ার শেরপুরে আদালতের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে ব্যক্তিমালিকানাধীন জায়গার ওপর দিয়ে সরকারি রাস্তা নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে। বুধবার (২০মার্চ) দুপুরে উপজেলার ভবানীপুর ইউনিয়নের তিরাইল গ্রামের ভুক্তভোগীদের পক্ষে সোলায়মান আলীর ছেলে আব্দুর রহমান স্থানীয় সাংবাদিকদের কাছে এই অভিযোগ করেন।
এর আগে রাস্তা নির্মাণের নকশা পরিবর্তন করে সরকারি জায়গার পরিবর্তে ব্যক্তি মালিকানাধীন জায়গা দখলে নিয়ে বালু ভরাট কাজ শুরু করার পর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ সুমন জিহাদী, উপজেলা প্রকৌশলী লিয়াকত হোসেন, ইউপি চেয়ারম্যান এসএম আবুল কালাম আজাদ, স্থানীয় বাসিন্দা সোহরাব মিয়া সরকারসহ আটজনের বিরুদ্ধে বগুড়ার সিনিয়র সহকারি জজ আদালতে মামলা দায়ের করা হয়।
তিরাইল গ্রামের বাসিন্দা সোলায়মান আলী ও তার স্ত্রী জান্নাতি বিবি বাদি হয়ে ওই মামলাটি করেন। পরে রাস্তা নির্মাণ কাজের ওপর অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা দেন আদালত। কিন্তু এই আদেশ অপেক্ষা করে গত মঙ্গলবার (১৯মার্চ) থেকে নতুন করে পাকাকরণ কাজ শুরু করেছেন সংশ্লিষ্টরা।
মামলা সূত্রে জানা যায়, তিনযুগ আগে উপজেলার ভবানীপুর ইউনিয়নের তিরাইল গ্রামসহ আশপাশের গ্রামের জনসাধারণের চলাচলের জন্য পনের থেকে বিশ ফুট প্রশস্ত কাঁচা রাস্তা নির্মাণ করা হয়। বর্তমান জরিপ আরএস নকশায় সেটি রয়েছে। পরবর্তীতে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের সুপারিশে ওই রাস্তাটি পাকাকরণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এজন্য আরএস নকশা অনুযায়ী সরকারি সার্ভেয়ার মাপজোক করে রাস্তার সীমানা নির্ধারণ করে দেন। কিন্তু কোনো কারণ ছাড়াই নকশা পরিবর্তন করে পৈতৃকসূত্রে প্রাপ্ত সোলায়মান আলীর ব্যক্তি মালিকানাধীন জায়গার মাটি খনন করে রাস্তা পাকাকরণ কাজ শুরু করেন। বিষয়টি জানার পর ভুক্তভোগীর ছেলে আব্দুর রহমান বিগত বছরের ২৮নভেম্বর ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে কাজ বন্ধ করে দেওয়ার পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট দপ্তরে ঘটনাটি লিখিতভাবে অবহিত করেন। এই কারণে মাঝে কিছুদিন কাজ বন্ধ থাকলেও বেআইনি আবারো রাস্তা নির্মাণ কাজ শুরু করা হয়েছে। একপর্যায়ে ঘটনাটি আদালতের নজরে আনা হয়। পরে আদালত ব্যক্তি মালিকানাধীন জায়গায় রাস্তা নির্মাণ না করার জন্য অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা দেন। ভুক্তভোগী ও মামলার বাদি সোলায়মান আলীর ছেলে আব্দুর রহমান অভিযোগ করে বলেন, ক্ষমতাসিন একটি অদৃশ্য শক্তির ইশারায় আমার পৈর্তৃকসূত্রে প্রাপ্ত জায়গা অবৈধভাবে দখলে নিয়ে রাস্তা নির্মাণের কাজ শুরু করায় ন্যায় বিচার পাওয়ার আশায় আদালতের দ্বাড়স্থ হয়েছি। সব কাগজ-পত্র যাছাই বাছাই অন্তে কাজের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন। এরপরও বিগত দুইদিন আগে থেকে আদালতের আদেশকে বৃদ্ধাঙলি দেখিয়ে সড়কটি পাকাকরণ করার জন্য ঝাড়– দিয়ে পরিস্কার করছেন শ্রমিকরা। যা সম্পুর্ণ আদালত অবমাননা বলে মন্তব্য করেন তিনি।
ঘটনাটি সম্পর্কে বক্তব্য জানতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সুমন জিহাদীর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তরে যোগাযোগ করার জন্য সাংবাদিকদের পরামর্শ দেন।উপজেলা প্রকৌশলী লিয়াকত হোসেন বলেন, আদালতের নিষেধাজ্ঞা থাকলে রাস্তার কাজ করার কোনো সুযোগ নেই। তবে বিষয়টি তার জানা নেই। তাই খোঁজখবর নিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে দাবি করেন তিনি।
Leave a Reply