ইয়েমেনভিত্তিক হাউছি যোদ্ধারা লোহিত ও এডেন উপসাগরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং তাদের মিত্র বাহিনীর ওপর হামলা অব্যাহত রেখেছে। মার্কিন পক্ষ দাবি করেছে তারা ইরান-সমর্থিত যোদ্ধাদের নিক্ষিপ্ত ১৫টি একমুখী ড্রোন ভূপাতিত করেছে।
ঘটনার কিছুক্ষণ পরই বিদ্রোহীরা হামলার দায় স্বীকার করে নিয়ে জানায়, তারা একটি ‘আমেরিকান’ বাণিজ্যিক জাহাজে ক্ষেপণাস্ত্র এবং ‘লোহিত সাগর ও এডেন উপসাগরে’ যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধজাহাজ লক্ষ্য করে ড্রোন হামলা চালিয়েছে।
ইসরাইল-হামাসের যুদ্ধে, হামাসের সাথে সংহতি জানিয়ে আসছে ইরান। নভেম্বরের পর থেকে লোহিত সাগর অঞ্চলে বিশ্ব বাণিজ্যের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এই পথটিতে জাহাজে ড্রোন আর ক্ষেপণাস্ত্র হামলা নিয়মিত বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত এটিই হাউছিদের সবচেয়ে বড় হামলাগুলোর মধ্যে একটি ।
যুক্তরাষ্ট্রের সেন্ট্রাল কমান্ড বা সেন্টকম জানায়, ভোর হবার আগেই লোহিত সাগর ও তার-সংলগ্ন এডেন উপসাগরে হাউছিরা ‘বড় ধরনের’ হামলা চালায়।
জোট বাহিনী এবং সেন্টকম বলছে, ড্রোনগুলোই মূলত ‘এই অঞ্চলে বাণিজ্যিক জাহাজ, যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনী এবং জোটের জাহাজগুলোর জন্য আসন্ন হুমকি স্বরূপ।’
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম প্ল্যাটফর্ম এক্স-এ দেয়া এক পোস্টে তারা ‘যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনীর জাহাজ এবং বিমানের সাথে জোটের নৌবাহিনীর একাধিক জাহাজ ও বিমান ১৫টি ড্রোন ভূপতিত করেছে। নৌচলাচলের স্বাধীনতা রক্ষা এবং আন্তর্জাতিক পানিসীমাকে নিরাপদ ও আরো সুরক্ষিত করতেই এসব পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।’
এদিকে, বিদ্রোহীরা দুটি পৃথক অভিযান চালিয়েছে বলে এক্স-এ জানিয়েছেন, হাউছি সামরিক মুখপাত্র ইয়াহিয়া সারিয়ি।
সারিয়ি বলেন, প্রথমটি এডেন উপসাগরে বাণিজ্যিক জাহাজ প্রোপেল ফরচুন, যেটি আমেরিকান জাহাজ বলে তিনি উল্লেখ করেন। আর দ্বিতীয় অভিযানে ‘৩৭ টি ড্রোন’ নিক্ষেপ করা হয় আমেরিকান যুদ্ধজাহাজ লক্ষ্য করে।
গত ডিসেম্বরে, লোহিত সাগরে হাউছিদের হামলা থেকে জাহাজ রক্ষায় সামুদ্রিক নিরাপত্তা উদ্যোগের ঘোষণা দিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র। এই সব আক্রমণের কারণে বানিজ্যিক জাহাজগুলি নির্ধারিত পথ পরিবর্তনে বাধ্য হয় যেখান থেকে সাধারণত বিশ্ব বাণিজ্যের ১২ শতাংশ বহন করা হয়।
বিদ্রোহীদের হামলায় চলতি সপ্তাহেই প্রথম হতাহতের ঘটনা ঘটল।
জাহাজে হামলার জবাবে ইয়েমেনের হাউছির ঘাঁটিগুলোতে জানুয়ারি মাস থেকে বার বার হামলা চালাতে থাকে যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেন। কিন্তু এতেও দমে না গিয়ে ক্রমাগত আমেরিকান ও ব্রিটিশ বাণিজ্যিক জাহাজগুলোকে লক্ষ্য করে আক্রমণ চালিয়েই যাচ্ছে হাউছিরা।
Leave a Reply