সাময়িক সঙ্কটে হতাশ না হয়ে ইসলামী আদর্শকে ধারণ করে দেশ, জাতি ও মানবতার কল্যাণে ময়দানে অকুতোভয় সৈনিকের ভূমিকা পালনের জন্য ইসলামী আন্দোলনের কর্মীদের প্রতি আহবান জানিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারি সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের।
তিনি আজ (শুক্রবার) বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী লালমনরহাট জেলা কর্তৃক আয়োজিত কর্মী সম্মেলনে ভার্চুয়াল প্লাটফর্মে যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও লালমনিরহাট জেলা আমীর প্রভাষক আতাউর রহমানের সভাপতিত্বে ও জেলা সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট মোঃ আবু তাহের এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানের শুরুতেই দারসুল কুরআন পেশ করেন জেলা নায়েবে আমীর মাওলানা হাবিবুর রহমান।
বৈঠকে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান বেলাল। অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সাবেক জেলা আমীর অ্যাডভোকেট আব্দুল বাতেন, জেলা সহকারী সেক্রটারি হাফেজ শাহ আলম, জেলা কর্মপরিষদ সদস্য ও সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান জননেতা অ্যাডভোকেট ফিরোজ হায়দার লাভলু, জননেতা আনোয়ারুল ইসলাম রাজু সহ জেলা ও উপজেলার দায়িত্বশীলবৃন্দ। আলোচনার ফাঁকে ফাঁকে ইসলামী সঙ্গীত পরিবেশ করেন টর্নেডো শিল্পী গোষ্ঠীর সাবেক শিল্পীরা।
এহসানুল মাহবুব জুবায়ের বলেন, আওয়ামী লীগ ৭ জানুয়ারি নির্বাচনের মাধ্যমে নির্মম তামাশার আয়োজন করেছে। কথিত এ নির্বাচন দেশীয় ও আন্তর্জাতিক কোন মহলের কাছে গ্রহণযোগ্য হয়নি। আর এটিই হচ্ছে ফ্যাসিবাদী ও লুটেরাদের আসল চরিত্র। তারা অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে দেশের গণতন্ত্র, গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ, জাতীয় শিক্ষা ও সংস্কৃতি এবং আইনের শাসনকে ধ্বংস ও পদদলিত করেছে। অবৈধ সরকার রাজনৈতিক ময়দানকে প্রতিপক্ষমুক্ত রাখার জন্যই আমীরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমান সহ বিরোধী দলীয় হাজার হাজার নেতা-কর্মীদের সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে আটক করে পুরো দেশকেই অঘোষিত কারাগারে পরিণত করেছে। তাই দেশকে ফ্যাসীবাদ ও স্বৈরাচার মুক্ত করতে সকলকে রাজপথের আন্দোলনের জোরদার করতে হবে। তিনি অগণতান্ত্রিক সরকারের পতন ও জনপ্রতিনিধিত্বশীল সরকার প্রতিষ্ঠায় দলমত নির্বিশেষে সকলকে ইস্পাত কঠিন ঐক্য গড়ে তোলার আহবান জানান।
তিনি বলেন, অপার সম্ভাবনার দেশ আমাদের এই বাংলাদেশ। আমাদের সম্পদের অভাব নেই। সবচেয়ে বড় সম্পদ আমাদের বিশাল জনগোষ্ঠী। কিন্তু শ্রেণি ও গোষ্ঠী বিশেষের অবৈধ ক্ষমতালিপ্সা এবং সঠিক নেতৃত্বের অভাবে আমরা এসব সম্পদের যথাযথ ব্যবহার করতে পারছি না। অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারী, দুর্নীতিবাজ, লুটেরা ও চেতনা ব্যবসায়িদের কারণেই দেশ একটি অকার্যকর রাষ্ট্রের দিকেই অগ্রসর হচ্ছে। কিন্তু জামায়াত একটি গণমুখী, আদর্শবাদী ও কল্যাণকামী রাজনৈতিক সংগঠন হিসাবে দেশকে ন্যায়-ইনসাফের ভিত্তিতে দেশকে ইসলামী কল্যাণ রাষ্ট্রে পরিণত করার প্রাণান্তকর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তিনি জ্ঞানের জগতে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করা সহ দেশকে একটি ইসলামী কল্যাণ রাষ্ট্রে পরিণত করার জন্য ইসলামী আন্দোলনের কর্মীদের সর্বশক্তি নিয়ে রাজপথে ঝাঁপিয়ে পড়ার আহবান জানান।
অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান বেলাল বলেন, ঈমানের অপরিহার্য দাবী ইসলামী আন্দোলন করা। আমাদেরকে বিবেকের আয়নার সামনে দাড়িয়ে সংশোধন হতে হবে। কেরামান কাতেবিনের সাথে সাথে আমাদেরকেও নিজেদের হিসাব সংরক্ষণের জন্য ব্যক্তিগত রিপোর্ট রাখতে হবে। আদর্শ পরিবার গঠনে পারিবারিক ইউনিট চালু করতে হবে।
অন্যান্য দায়িত্বশীলেরা বলেন, আমাদেরকে সামগ্রীক জীবনে তাকওয়ার নীতি অবলম্বন করতে হবে। খুশু খুজু সহকারে নামাজ আদায় করতে হবে। সামনে পবিত্র মাহে রমজান, আমাদের সবাইকে রমজানের প্রস্তুতি গ্রহণ করতে হবে। শিরক, বিদায়াত ও গীবতমুক্ত জীবন গঠন সহ সকলের হক আদায়ের ব্যাপারে আরও দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখতে হবে। –খবর বিজ্ঞপ্তির
Leave a Reply