নওগাঁর সাপাহারের সরফতুল্লাহ ফাজিল মাদ্রাসা কেন্দ্রে ভূয়া পরীক্ষার্থী দিয়ে পরীক্ষা দেওয়ানো সেই আট মাদ্রাসা প্রধানের বিরুদ্ধে থানায় নিয়মিত মামলা দায়ের করা হয়েছে। ( মঙ্গলবার) দিবাগত রাতে কেন্দ্র সচিব মো. মোসাদ্দেক হোসেন বাদী হয়ে তাদের বিরুদ্ধে এ মামলা করেন।
এর আগে ওই দিন সকালে আরবী ২য় পত্র পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে ৫৯ জন ভূয়া দাখিল পরীক্ষার্থীকে আটক করা হলেও পরবর্তীতে তাদের বয়স ১৮ বছরের নিচে হওয়ায় তাদের অভিভাবকদের জিম্মায় মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয় এবং আসল পরীক্ষার্থীদের বহিষ্কার করা হয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সাপাহার থানার অফিসার ইনচার্জ পলাশ চন্দ্র দেব।
ভূয়া পরীক্ষার্থী দিয়ে পরীক্ষা দেওয়ানো আট টি মাদ্রাসার মধ্যে তিনটি সদ্য (এমপিওভুক্ত)এবং পাঁচ টি নন (এমপিওভুক্ত)। এগুলো হলো, সাপাহারের সিমুলডাঙ্গা দাখিল মাদ্রাসা (সদ্য এমপিওভুক্ত), মানিকুড়া দাখিল মাদ্রাসা (সদ্য এমপিওভুক্ত), বলদিয়াঘাট দাখিল মাদ্রাসা (সদ্য এমপিওভুক্ত), পলাশডাঙ্গা দাখিল মাদ্রাসা, দেওপাড়া দাখিল মাদ্রাসা, আলাদিপুর দাখিল মাদ্রাসা, তুলসিপাড়া দাখিল মাদ্রাসা, আন্ধারদীঘি দাখিল মাদ্রাসা।
এজাহার সূত্রে জানা যায়, সারা দেশের ন্যায় এ দিন আরবী ২য় পত্র বিষয়ে পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে কিছু ভূয়া পরীক্ষার্থী এই কেন্দ্রে পরীক্ষা দিচ্ছেন সচিবের এমন নির্দেশে কক্ষ পরিদর্শকগণ খাতা স্বাক্ষর করার সময় বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে কেন্দ্র সচিবকে জানালে তিনি তাৎক্ষণিকভাবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানান। এরপর সাথে সাথেই তিনি কেন্দ্রে অভিযান পরিচালনা করেন। এসময় শিক্ষার্থীদের প্রবেশপত্র, রেজিষ্ট্রেশন কার্ড, ছবি সহ প্রয়োজনীয় সবকিছু যাচাই-বাছাই করেন। যাচাই-বাছাই শেষে এই ৫৯ জন ভুয়া পরীক্ষার্থীকে সনাক্ত করে তাদের প্রথমে আটক করা হলেও পরবর্তীতে তাদের বয়স কম হওয়ায় তাদের মুচলেকা নিয়ে অভিভাবকদের নিকট হস্তান্তর করা হয়। এ
জাহারে আরও জানা যায়, এই কেন্দ্রে ৪০ টি মাদ্রাসার পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এখানে ৮৯৮ জন পরীক্ষার্থী এবারে পরীক্ষা দিচ্ছেন। এরমধ্যে শিমুলডাঙ্গা দাখিল মাদ্রাসা থেকে ১১ জন, পলাশডাঙ্গা দাখিল মাদ্রাসা থেকে ৮ জন, দেওপাড়া সিংপাড়া দাখিল মাদ্রাসা থেকে ৩ জন, আলাদিপুর দাখিল মাদ্রাসা থেকে ১ জন, তুলশিপাড়া দাখিল মাদ্রাসা থেকে ১৪ জন, বলদিয়াঘাট দাখিল মাদ্রাসা থেকে ২ জন, আন্ধারদীঘি দাখিল মাদ্রাসা থেকে ১৭ জন, মানিকুড়া দাখিল মাদ্রাসা থেকে ৩ জন ভূয়া পরীক্ষার্থী কেন্দ্রে এসে পরীক্ষা দিচ্ছিলেন। এদের মধ্যে অধিকাংশই নবম ও দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী।
এবিষয়ে কেন্দ্র সচিব মো. মোসাদ্দেক হোসেন বলেন, গোপন সূত্রে জানতে পেরে তাৎক্ষণিক ভাবে আমি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে অবহিত করি। স্যাররা এসে কক্ষ পরিদর্শকদের সহায়তায় এই ৫৯ জন ভুয়া পরীক্ষার্থীদের সনাক্ত করেন এবং ওই ৮টি মাদ্রাসার প্রধানের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা দায়ের করার নির্দেশ দেন। এরপর রাতেই আমি বাদী হয়ে ওই আটজন মাদ্রাসা প্রধানের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করি।
সত্যতা নিশ্চিত করে সাপাহার থানার অফিসার ইনচার্জ পলাশ চন্দ্র (দেব) বলেন, ৫৯ জন ভূয়া পরীক্ষার্থী দিয়ে পরীক্ষা দেওয়ানো সেই প্রতিষ্ঠান প্রধানদের বিরুদ্ধে পাবলিক পরীক্ষা আইন ১২ ও ১৩ ধারায় মামলা দায়ের করেছেন কেন্দ্র সচিব। এখন তারা পলাতক থাকায় তাদের আটক করা যায়নি। তবে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলেও জানান তিনি।
Leave a Reply