লোক-লোকান্তর, কালের কলস, সোনালী কাবিন, বখতিয়ারের ঘোড়া – এরকম দুর্দান্ত জনপ্রিয় কাব্যগ্রন্থগুলোর লেখক হলেন কবি আল মাহমুদ।
মানবতাবাদী ও বিশ্বাসী ক্ষণজন্মা এই কবি ১৯৩৬ সালে ব্রাহ্মণবাড়িয়াতে জন্মগ্রহণ করেন। লেখালেখি শুরু করেন ৫০’র দশকে। লেখালেখি শুরু করার পর তাকে পাঠকপ্রিয় একজন কবি হতে খুব বেশি বেগ পেতে হয়নি।
সরাসরি রাজনীতির সাথে যুক্ত না হলেও জীবনের শুরুর দিকে কবির লেখায় বামপন্থার প্রভাব ছিলো সুস্পষ্ট। জাসদের পত্রিকা দৈনিক গণকন্ঠ পত্রিকার সম্পাদক হিসেবেও কাজ করেছেন এককালে।
১৯৭৪ সালে বামপন্থী চিন্তাধারার প্রচারক উক্ত পত্রিকার সম্পাদক থাকাবস্থাতে কবি আল মাহমুদ গ্রেফতার হন। এরপর কবি ধীরে ধীরে ইসলামের প্রতি অনুরাগী হন। আগের বামপন্থার প্রভাব থেকে তাঁর কবিতা, লেখালেখিও মুক্ত হয়।
কবিকে যখন প্রশ্ন করা হলো যে, প্রাথমিক জীবনে কবি বামপন্থী চিন্তাধারার হলেও, সেখান থেকে সরে এসে কেন ইসলামী ভাবধারার দিকে ঝুঁকলেন? তখন তিনি তার জবাবে বলেন -“আমি যে পরিবারে জন্মেছি, সেই পরিবারের সবাই ছিলো খুবই ধর্মপ্রাণ লোক। তাদের মধ্যেই যে রয়েছে সত্যিকারের পথের ঠিকানা, কিভাবে যেনো এটা আমাকে দূর থেকে ইশারায় ডাকতো।”
মানবতাবাদী, উম্মাহ দরদী বিশ্বাসী এই কবি আকাঙ্ক্ষা করতেন, তিনি যেনো পবিত্র শুক্রবারে ইন্তেকাল করেন। ‘স্মৃতির মেঘলাভোরে’ কবিতায় কবি আল-মাহমুদ ঠিক এভাবেই বলেছিলেন বিষয়টা-
“কোনো এক ভোরবেলা, রাত্রি শেষে শুভ শুক্রবারে
মৃত্যুর ফেরেশতা এসে যদি দেয় যাওয়ার তাকিদ
অপ্রস্তুত এলোমেলো এ গৃহের আলো অন্ধকারে
ভালোমন্দ যা ঘটুক মেনে নেবো এ আমার ঈদ।”
মহান আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ’লা ঠিকই তাঁর হৃদয়ের আকুলতা কবুল করেছেন। ২০১৯ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি শুক্রবারে মৃত্যুর ফেরেশতা এসে বাংলা সাহিত্যের এই ধ্রুবতারাকে নিয়ে গেছেন। ইন্না-লিল্লাহি ওয়া-ইন্না ইলাহি রাজিউন।
আল্লাহ কবির কবরকে ফিরদাউসের ফুল বাগানে পরিণত করুন, এই কামনাই করি জগতের রব রব্বুল আলামিনের নিকট।
নুরুল ইসলাম বুলবুলের ফেসবুক ওয়াল থেকে নেওয়া
Leave a Reply