বিরামপুরে পুলিশ বক্স পরিত্যাক্ত : বেড়ে গেছে অপরাধ

ড. এনামুল হক, দিনাজপুর প্রতিনিধি:
    সময় : রবিবার, ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০২৪, ৪:০২ পূর্বাহ্ণ
  • ২২৭ Time View

দিনাজপুর-বিরামপুর-ঢাকা মহাসড়কের দুই পাশে বন বিভাগের বিস্তীর্ণ সামাজিক বন। বিকেলের পর থেকে সড়কের দুই পাশে অন্ধকার ঢেকে যায়। সন্ধ্যা গড়িয়ে রাত নামলে পথচারীদের কানে আসে শিয়ালের ডাক।

মহাসড়ক দিয়ে চলাচল করা তখন গা ছমছম ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায়। দুর্বৃত্তরদের ভয়ে ভীত হয়ে রাস্তা পারাপার হতে হয়। দুই দশক আগে এ মহাসড়কে ভারী যানবাহন ও পথচারীদের নিরাপত্তা দিতে বসানো হয়েছিলো একটি পুলিশ বক্স। কিন্তু সেই পুলিশ বক্সে পাঁচ বছর ধরে পুলিশ থাকছে না। এতে এ মহাসড়কে ছিনতাই ও অপরাধের ঘটনা বেড়ে গেছে।

গত এক মাসে ঐ পুলিশ বক্সের সামনে মহাসড়কে আটজনের মুঠোফোন ছিনতাই হয়েছে। এমনকি দিনের পর দিন সড়কের পাশে অযত্নে জানালা খুলে নিয়ে গেছে চোরেরা। বেহাল এই পুলিশ বক্সের দেখা মিলবে দিনাজপুরের বিরামপুর উপজেলা শহরের প্রবেশমুখে দিনাজপুর-বিরামপুর-গোবিন্দ গঞ্জ-ঢাকা মহাসড়কে। এলাকাটির নাম দূর্গাপুর।

স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে জানা গেছে, গত এক মাসে ঐ পুলিশ বক্সের সামনে মহাসড়কে চলাচল করা দূর্গাপুর গ্রামের পথচারীদের মধ্যে প্রায় আটজনের মুঠোফোন ছিনতাই হয়েছে।

গত ডিসেম্বরে দিনাজপুর থেকে গোবিন্দগঞ্জগামী একটি যাত্রীবাহী বাসে ঐ পরিত্যক্ত পুলিশ বক্সের সামনে থেকে সন্ধ্যায় দুর্বৃত্তরা পাথর ছুড়ে মারে। এতে করে বাসে থাকা এক নারী আহত হয়ে স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছেন।

উপজেলার পলিপ্রয়াগপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রহমত আলী বলেন, দূর্গাপুর ঢিবিসহ আশপাশের পথচারী ও গণপরিবহনের নিরাপত্তার কথা ভেবে ২০০৪ সালে ইউনিয়ন পরিষদের উদ্যোগে এডিপির (বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি) মাধ্যমে ইটের দেয়াল ও টিনের ছাউনি দিয়ে একটি পুলিশ বক্স তৈরি করা হয়। তখন থেকে ১২ বছরের বেশি সময় ধরে সেখানে পুলিশ সদস্যরা ডিউটি করতেন। এর ফলে ঐ সময়ে সেখানে ছিনতাই ও চুরি-ডাকাতি বন্ধ ছিলো। কিন্তু পাঁচ বছর ধরে সেখানে পুলিশের ডিউটি না থাকায় উক্ত এলাকায় আবারো চুরি ও ছিনতাই শুরু হয়েছে। গত এক মাসে আমার এলাকায় ৮ থেকে ১০ টি জায়গায় চুরির ঘটনা ঘটেছে। স্থানীয় লোকজন জানান, গত বছর নভেম্বর মাসের এক রাতে ঐ পুলিশ বক্সের চার দেয়ালে থাকা লোহার গ্রিলের পাঁচটি জানালা খুলে নিয়ে গেছে চোরেরা।

পুলিশ বক্সের দক্ষিণ পাশের শ্যামপুর গ্রামের বাসিন্দা ও দোকানী সুপল মরমু বলেন, ঢিবিত তো আর পুলিশ থাকে না। চোরেরা জানলা-দরজা ব্যাবাক খুলে নিয়ে গেইছে। পুলিশের ডিউটির ঘরের জানলা-দরজা চোরেরা খুলে নিয়ে যায়, তাহলে তো হামার মতো মানুষের বাড়িঘরোত দরজা-জানলা কিচ্ছুই থাকপে না। ওটে (ওখানে) পুলিশ ডিউটি করলে তো হামার এলাকার মানুষের উপকার হলো হনে।

জানতে চাইলে বিরামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুব্রত কুমার সরকার বলেন, দুর্গাপুর এলাকা ও সেখানকার মহাসড়কে যাতে কোনো ধরনের চুরি-ছিনতায়ের ঘটনা না ঘটে, সেজন্য পুলিশ প্রশাসন সতর্ক অবস্থানে থাকবে। তবে থানা পুলিশের পক্ষ থেকে পুলিশ বক্সটি এ মুহূর্তে সংস্কারের সুযোগ না থাকলেও সেখানে এখন থেকে নিয়মিত পুলিশের প্যাট্রল ডিউটির ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হবে।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved ©  doiniksatmatha.com