বাজার পরিস্থিতি নাগালের মধ্যে আনতে হবে

Reporter Name
    সময় : বুধবার, ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০২৪, ৪:৪৬ অপরাহ্ণ
  • ১২৫ Time View


রমজানের আগে বাজার অস্থির করার সংস্কৃতি পুরনো। রমজান শুরু হতে আরো এক মাস বাকি। এর মধ্যে রোজার পণ্যের দাম বৃদ্ধি নিযে গণমাধ্যমে খবর আসছে। খেজুর, চিনি, আটা, ময়দা, ভোজ্যতেল, বেসন, মুড়ি, ছোলাসহ বিভিন্ন পণ্যের দাম বেড়েছে। রোজা শুরুর আগে বাজারের এই হালচাল উদ্বেগের। কয়েক মাস আগে থেকে ঊর্ধ্বমুখী চাল, মাছ ও সবজির বাজার। দাম নিয়ন্ত্রণে চাল, চিনি, ভোজ্যতেল ও খেজুরের আমদানি শুল্ক কমিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এরপরও বাজারে এর প্রভাব নেই। সরকারের বেঁধে দেয়া দামকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখাচ্ছে সিন্ডিকেট ও করপোরেট ব্যবসায়ীরা। অর্থনৈতিক বিশ্লেষক ও বিশিষ্টজনরা বলছেন, বেশ কয়েকটি নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য ৫ থেকে ৬টি করপোরেট কোম্পানির নিয়ন্ত্রণে চলে যাচ্ছে। এছাড়া মধ্যস্বত্বভোগীরা সিন্ডিকেটের মাধ্যমে পণ্য মজুত ও কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে বাজার নিয়ন্ত্রণ করছে। ব্যবসায়ীরা সুযোগ বুঝে এ সময়টাতেই চাহিদাসম্পন্ন পণ্যের দাম বাড়িয়ে দেন। বড় থেকে ছোট ব্যবসায়ী সবার প্রবণতা এ সময় বেশি লাভ তুলে নেয়ার। তবে এবার এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ডলার সংকট। এ কারণে নিত্যপণ্য আমদানি বিল পরিশোধে দেরি হচ্ছে আর এলসি খোলায় জটিলতাও দেখা দিয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে হু হু করে বাড়ছে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম।

বিশ্বব্যাপী সীমাহীন এক অস্থিরতার মধ্যে আওয়ামী লীগ টানা চতুর্থ মেয়াদে রাষ্ট্রক্ষমতায় আসীন হয়েছে মাসখানেক হলো। এসব অস্থিরতার মধ্যে রাশিয়া-ইউক্রেন এবং ফিলিস্তিন-ইসরায়েলের উত্তপ্ত পরিস্থিতিই অনেকটা প্রকট আকারে জনসমক্ষে প্রতীয়মান। আওয়ামী লীগের সামনে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ এখন আর কোনো রাজনৈতিক দল নয়- বড় চ্যালেঞ্জ ‘বাজার’। সরকার ব্যবসায়ী শ্রেণিকে কতটা মোকাবিলা করতে সক্ষম হবে জানি না। আমরা দেখছি, ছোট-বড়-মাঝারি সব আকৃতির ব্যবসায়ীরাই বাজারকে নানাভাবে অস্থির করে তুলছেন। তাদের নানা কৌশল-অপকৌশলের শিকারে পরিণত এ দেশের সাধারণ মানুষ। এমন অবস্থা থেকে উত্তরণে সরকারকে মূল ভূমিকায় নামতে হবে। ইতোমধ্যে বাজার স্থিতিশীল রাখতে সরকার নানামুখী উদ্যোগ নিয়েছে। ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টির মাধ্যমে যাতে বাজারকে অস্থিতিশীল করতে না পারে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। অবশ্য এসব তৎপরতা প্রতি বছরই দেখা যায়। রমজানে বেশি চাহিদাসম্পন্ন পণ্যের পর্যাপ্ত মজুত থাকার এবং যে কোনো মূল্যে পণ্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখার ঘোষণা দেন সংশ্লিষ্টরা। কিন্তু এরপরও রমজানের আগে বাজার অস্থিতিশীল হয়ে ওঠে। মানতেই হবে যে, অতীতের তুলনায় গত কয়েক বছরে রোজার সময় ভোগ্যপণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকার মোটামুটি সফলতার পরিচয় দিয়েছে।

মূল্যবৃদ্ধি রোধ করতে না পারলেও নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রাখতে সক্ষম হয়েছে। বৈশ্বিক মন্দা পরিস্থিতি এবং ডলার সংকটের কারণে এবার সে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সরকারকে আগের তুলনায় বেশি সতর্ক থাকতে হবে। কাজেই রোজা শুরুর আগেই যাতে ব্যবসায়ীরা দাম বাড়ানোর কৌশল বাস্তবায়ন করতে না পারে সেদিকে বিশেষ দৃষ্টি রাখতে হবে এখন থেকেই। রোজায় বাজার নিয়ন্ত্রণে টিসিবির মাধ্যমে খোলাবাজারে পণ্য বিপণন, বাজার মনিটরিং ইত্যাদি যেসব পরিকল্পনা থাকে সেগুলো যেন যথাযথভাবে বাস্তবায়িত হয় তা নিশ্চিত করতে হবে। পণ্য পরিবহন নির্বিঘœ রাখতে বিশেষ করে কৃষিপণ্যের সরবরাহে যাতে কোনো বাধার সৃষ্টি হতে না পারে সেদিকে নজর রাখতে হবে সংশ্লিষ্টদের।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved ©  doiniksatmatha.com