ফিলিস্তিনপন্থী বিক্ষোভকারীদের দাবি মেনে নিলো দুটি মার্কিন বিশ্ববিদ্যালয়

সাতমাথা ডেস্ক:
    সময় : শনিবার, মে ৪, ২০২৪, ৪:৩৬ পূর্বাহ্ণ
  • ১৩৩ Time View

যুক্তরাষ্ট্রের দুটি বিশ্ববিদ্যালয় ফিলিস্তিনপন্থী বিক্ষোভকারীদের দাবি মেনে নিয়েছে। এ দুটি বিশ্ববিদ্যালয় হলো ভারমন্ট বিশ্ববিদ্যালয় এবং ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়, রিভারসাইড।

ভারমন্ট বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ঘোষণা করেছে যে চলতি মাসের শেষ দিকে গ্রাজুয়েটদের উদ্দেশে সূচনা বক্তব্য দেয়ার জন্য জাতিসঙ্ঘে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত লিন্ডা টমাস-গ্রিনফিল্ডকে আমন্ত্রণ জানানো হবে না। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের এই ঘোষণায় বিক্ষোভকারীরা খুশি হয়েছে।

লিন্ডার আমন্ত্রণ বাতিল করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা রোববার থেকে তাঁবু খাটিয়ে বিক্ষোভ করছিল। উল্লেখ্য, এই লিন্ডা কয়েকবার গাজায় যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে যুক্তরাষ্ট্রের হয়ে ভেটো দিয়েছেন।

এদিকে ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়, রিভারসাইডের প্রশাসকরা ফিলিস্তিনপন্থী বিক্ষোভকারীদের সাথে সমঝোতায় উপনীত হওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন অস্ত্র প্রস্তুত ও সরবরাহের সাথে জড়িত কোম্পানিগুলোতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিনিয়োগ পর্যালোচনা করতে রাজি হয়েছে। অর্থাৎ কোনো বিনিয়োগ আর্থিক ও নৈতিকভাবে সুষ্ঠু না হলে তারা ওই বিনিয়োগ প্রত্যাহার করে নেবে। প্রশাসনের এই ঘোষণার পর ফিলিস্তিনপন্থী বিক্ষোভকারীরা ইসরাইলবিরোধী তাঁবু গুটিয়ে নিয়েছে।

এবার অস্ট্রেলিয়ায় ক্যাম্পাস বিক্ষোভ
সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়ে শুক্রবার ইসরাইল ও গাজার কয়েক হাজার সমর্থকের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়েছে। বিশ্বের অন্য প্রান্তের এক ক্যাম্পাস ও মহাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের কলেজ-শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ ও মধ্যপ্রাচ্যের উত্তাল পরিস্থিতির প্রতিধ্বনি শোনা গেল।

দুই পক্ষের বিক্ষোভকারীরা চোখে চোখ রেখে স্লোগান দিতে দিতে পতাকা উড়িয়েছে। কয়েকটি উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় ছাড়া বিক্ষোভ ও পাল্টা বিক্ষোভ শান্তিপূর্ণই।

তবে, সপ্তম মাসে পড়তে চলা গাজার যুদ্ধ ও যুক্তরাষ্ট্রের সাংস্কৃতিক যুদ্ধ সমুদ্রপারের রাজনীতিকেও প্রভাবিত করছে বলে ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে।

ফিলিস্তিনিপন্থী বিক্ষোভকারীরা অস্ট্রেলিয়ার শিক্ষাজগতের অন্যতম সুপ্রসিদ্ধ প্রতিষ্ঠান সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়ে গথিক কায়দায় নির্মিত বেলেপাথরের ভবনের সামনে সবুজ চত্বরে ১০ দিন ধরে শিবির তৈরি করে অবস্থান বিক্ষোভ করছে।

কয়েক ডজন তাঁবু খাঁটানো হয়েছে। তাতে ফেস্টুন, ব্যানার ও ফিলিস্তিনের পতাকা রয়েছে। শিক্ষার্থী ও অন্যান্য কয়েকশো বিক্ষোভকারীর কাছে এটাই হয়ে উঠেছে কেন্দ্রবিন্দু। তারা ইসরায়েলের স্থল অভিযান ও গাজায় বোমাবর্ষণের বিরোধিতা করছে।

২৪ বছর বয়সী কলা ও বিজ্ঞান শাখার শিক্ষার্থী দেগলান গডউইন। তিনি এই শিবিরের অন্যতম আয়োজকও। তার কথায়, যুক্তরাষ্ট্রের বিক্ষোভ একই সাথে অনুপ্রেরণা এবং সতর্কবার্তাও।

গডউইন বলেন, নিউ ইয়র্কের কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় ‘আমাদের নিজস্ব শিবির তৈরিতে’ অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে। কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে পুলিশি দমন ও গণ-গ্রেফতারির ঘটনা ঘটেছে।

যুক্তরাষ্ট্রের বিক্ষোভকারীদের মতো অস্ট্রেলিয়ার প্রতিবাদীরা চাইছে, ইসরাইলি প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করুক সিডনি বিশ্ববিদ্যালয় এবং অস্ত্র কোম্পানিগুলো থেকে অনুদান প্রত্যাখ্যান করুক।

সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসকরা চাইছেন না সেখানে যুক্তরাষ্ট্রের অভিজ্ঞতার পুনরাবৃত্তি হোক।

ভাইস চ্যান্সেলর মার্ক স্কট শিক্ষার্থী ও কর্মীদের লিখিতভাবে জানিয়েছেন, তিনি ‘মত প্রকাশের স্বাধীনতার বিষয়ে দায়বদ্ধ’ এবং শিবিরকে ভেঙে দিতে তিনি পুলিশ ডাকেননি।

শুক্রবারের বিক্ষোভের সময় অস্ট্রেলিয়ার পুলিশ আশ্চর্যজনক হলেও অনুপস্থিত ছিল। এই দিন ফিলিস্তিনিপন্থী শিবিরে প্রায় ১০০ জন ইসরাইলপন্থী বিক্ষোভকারী ৪০০ জন প্রতিবাদীর মুখোমুখি হয়।

তবে যুক্তরাষ্ট্রের মতো সিডনির বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধেও চরমপন্থার অভিযোগ উঠেছে।

ইহুদি গোষ্ঠীগুলো তাদের উদ্বেগের কথা জানিয়েছে। তাদের বক্তব্য, ‘ইহুদিবাদীদের অস্তিত্ব” ও “নদী থেকে সমুদ্র’ ইত্যাদি নিয়ে স্লোগান থেকে প্রমাণিত যে, ইহুদি-বিদ্বেষ ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে।

এই পরিস্থিতিতে এক শ’র বেশি ইহুদি ও ইসরাইলপন্থী বিক্ষোভকারী শুক্রবার ফিলিস্তিনপন্থী ছাউনির কাছে মিছিল করে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তারা বার্তা দিতে চাইছে যে ইহুদি শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে নিরাপদ এবং তাদের কণ্ঠস্বর শোনানোরও অধিকার রয়েছে।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved ©  doiniksatmatha.com