বগুড়ার নন্দীগ্রামে জমে উঠেছে সরিষার হাট। হাট জমে উঠলেও সরিষার ফলন ও দাম কিছুটা কম থাকায় হতাশার ছাপ দেখা গেছে সরিষা চাষীদের চোখে।
নন্দীগ্রামের এ সরিষার হাটটি নতুন হলেও বিপুল পরিমাণ সরিষা আমদানি হচ্ছে এ হাটে।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি রবি মৌসুমে নন্দীগ্রাম উপজেলায় ৭ হাজার ২০০ হেক্টর জমিতে সরিষা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিলো কিন্তু লক্ষমাত্রার চেয়েও বেশি পরিমাণ জমিতে সরিষার চাষাবাদ হয়েছে। নন্দীগ্রাম হাট কর্তৃপক্ষ জানান, সপ্তাহে প্রতি শনি, মঙ্গল ও বুধবার এখানে বসছে সরিষার হাট। এই হাটে বিভিন্ন জাতের সরিষা উঠে এবং সরিষার মান-দাম কিছুটা বেশি থাকায় উপজেলার দূর-দুরান্ত থেকে সরিষা ক্রয়-বিক্রয় করতে আসছে এই হাটে ক্রেতা-বিক্রেতারা।
নন্দীগ্রাম উপজেলার বুড়ইল ইউনিয়নের সরিষার বেপারি রেজাউল করিম বলেন, অন্যান্য হাটের তুলনায় নন্দীগ্রাম হাটে প্রচুর পরিমাণ সরিষার আমদানি হচ্ছে। এই হাটটি বাড়ির খুব নিকটে হওয়ায় পরিবহন খরচ অনেক কম হয়। শনিবার হাটে আমি ৫০ মণ সরিষা কিনেছি।
সরিষার বেপারি মিলন সরকার বলেন, নন্দীগ্রাম হাটে প্রচুর পরিমাণ সরিষা আমদানি হয়। আমি সরিষা কিনে রেখে পরে বিক্রি করি। শনিবার হাটে আমি ২০০ মণ সরিষা কিনেছি। বর্তমানে সরিষার মান ও শুকনো প্রকার ভেদে ১৬শ থেকে ২১শ টাকা মণ দরে কিনেছি।
সরিষা চাষি মাসুদ রানা বলেন, রবি মৌসুমে সরিষা আবাদ করে উৎপাদিত সরিষা মৌসুমের সময় অল্প বিক্রি করে কিছুদিন পর সব বিক্রি করে দেই। এতে মৌসুমের চেয়ে কিছুটা দাম বেশি পাওয়া যায়। এ বছর আমি ৫ বিঘা জমিতে উন্নত জাতের সরিষার আবাদ করেছি। এবার সরিষার ফলন তেমন ভালো নয় আমি বিঘা প্রতি ৪মন সরিষা পেয়েছি এতে খরচ উঠবে কিনা সন্দেহ আছে।
অন্যদিকে নন্দীগ্রাম পৌর সভার সাবেক মেয়র সুশান্ত কুমার শান্ত বলেন, আমি প্রতিবছরের ন্যায় এবছরেও ৮০ বিঘা জমিতে সরিষা আবাদ করেছি প্রতি বিঘায় ৩মন করে ফলন হয়েছে এতে আমার অনেক টাকা লোকশান গুনতে হবে।
নন্দীগ্রাম হাটের ইজারাদার আব্দুর রাজ্জাক ও আবু সাঈদ বলেন, নন্দীগ্রাম হাটটি নতুন হলেও অল্পদিনের ব্যবধানে হাটটি সরিষার হাট হিসেবে খুব পরিচিতি লাভ করেছে। আর এই হাটের সরিষার গুণগত মান ভালো এবং সঠিক মূল্য পাওয়ায় দূর-দুরান্ত থেকে সরিষা ক্রয়-বিক্রয় করতে আসছে ক্রেতা-বিক্রতারা। এছাড়াও উপজেলার রণবাঘা ও কুন্দারহাটসহ কয়েকটি হাটে সরিষা পাওয়া যায়।
নন্দীগ্রাম উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা গাজীউল হক বলেন, আবহাওয়া কিছুটা অনুকূলে থাকা ও কৃষি বিভাগের সঠিক পরামর্শ নিয়ে কৃষকরা সরিষার আবাদ করেছে। রবি মৌসুমে এবার উপজেলায় সাড়ে ৭ হাজার হেক্টর জমিতে লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিলো।তবে লক্ষমাত্রা নির্ধারণের চেয়েও অধিক সরিষা চাষাবাদ হয়েছে যা বিগত বছরের সরিষার লক্ষমাত্রাকে ছাড়িয়ে গেছে। তবে হঠাৎ বৃষ্টির কারণে গত বছরের চেয়ে এবছর সরিষার ফলন কিছুটা কম হয়েছে। মৌসুমের শুরুর দিকে বাজারে প্রচুর পরিমানে সরিষার আমদানি থাকায় দাম কিছুটা কম। সরিষার আমদানি কিছুটা কমে গেলে দাম বৃদ্ধি পাবে।
Leave a Reply