বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেছেন, এ দেশ থেকে ফ্যাসিবাদ চিরতরে বিদায় নিয়েছে। দেশে আর ফ্যাসিবাদের পুনর্বাসন হবে না। পরবর্তী সরকারে কে আসবে, সেটা নির্ধারণ করবে জনগণ। জনগণ যদি মনে করে, এমন কাউকে আবারও ক্ষমতায় আনবে, যারা পূর্বের মতো ফ্যাসিবাদ প্রতিষ্ঠা করবে, তাহলে এর দায়দায়িত্বও জনগণকেই নিতে হবে। এখন সিদ্ধান্ত নিতে হবে জনগণকে যে তারা আগামী সময়ে কাকে ক্ষমতায় বসাবে।
আজ শুক্রবার বিকেলে কুমিল্লার দেবীদ্বার উপজেলা পরিষদ হলরুমে ‘ফ্যাসিবাদ-পরবর্তী আগামীর দেবীদ্বার নিয়ে জনগণের ভাবনা ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের সাথে মতবিনিময় সভা’য় হাসনাত আবদুল্লাহ এ কথা বলেন।
নিজের এলাকা দেবীদ্বার প্রসঙ্গে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, দেবীদ্বারে কোনোভাবেই চাঁদাবাজিকে স্থান দেওয়া হবে না। চাঁদাবাজি বন্ধে রাজনৈতিক ও সামাজিকভাবেই সবাইকে মোকাবিলা করতে হবে। দেবীদ্বারের অবস্থা এমন হয়েছে, যারা রাজনীতিতে আসছে, তারা বিদেশে থাকছে এবং দেশে এসে পৈতৃক কোটায় ক্ষমতায় এসেছে। তাদের নিজেদের মধ্যে পাতানো বিরোধী বিরোধী খেলা আছে, অর্থাৎ সরকারে গেলেও আমার পরিবার, আবার বিরোধী দলে গেলেও আমার পরিবার।
হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘গত ১৬ বছর যারা দেবীদ্বারের মানুষের ওপর জুলুম-নির্যাতন করেছে, তাদের সমঝোতার মাধ্যমে মামলা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। আমি আপনাদের নিশ্চয়তা দিচ্ছি, আপনারা যাঁরা নির্যাতনের শিকার হয়েছেন, আপনারা তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা করবেন এবং আইনি সহায়তা নেবেন। এর জন্য যারা বাধা দেবে, তাদের নামগুলো প্রকাশ করবেন।’
সভায় আরও বক্তব্য দেন বুয়েটের শিক্ষক খোরশেদ আলম, জামায়াতে ইসলামী দেবীদ্বার উপজেলা শাখার আমির শহিদুল ইসলাম, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের উপজেলা আমির পারভেজ সরকার, জাতীয় গণ অধিকার পরিষদের কুমিল্লা জেলার যুগ্ম আহ্বায়ক মো. জাকির হোসেন প্রমুখ।
এর আগে সকালে একই হলরুমে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে দেবীদ্বার উপজেলায় নিহত ও আহত ব্যক্তিদের পরিবারে আর্থিক সহায়তা প্রদান অনুষ্ঠানেও বক্তব্য দেন হাসনাত আবদুল্লাহ। অনুষ্ঠানে এনআরবিসি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রবিউল ইসলাম, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিগার সুলতানা, আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের প্রতিনিধি মাহমুদুল হাসান, দেবীদ্বারের সমন্বয়ক মুক্তাদির জারিফ ওরফে সিক্তসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন। দুটি অনুষ্ঠানেরই আয়োজন করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, দেবীদ্বার।
অনুষ্ঠানে হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে নিহত ও আহত হয়েছেন এমন কেউ যেন অর্থসহায়তা থেকে বাদ না পড়েন, তাঁরা সেটি নিয়ে কাজ করছেন। দেবীদ্বারে যাঁরা শহীদ ও আহত হয়েছেন, তাঁদের জন্য বিভিন্ন ফাউন্ডেশনে গিয়ে গিয়ে তিনি অর্থসহায়তা এনেছেন। ইতিমধ্যে দেবীদ্বারের ১০টি শহীদ পরিবারকে ২০ লাখ টাকা দেওয়া হয়েছে। বাকি দুই শহীদের নাম তিনি পরে পেয়েছেন। আহত ব্যক্তিদের দেওয়া হয়েছে ৬ লাখ টাকা। আজ শহীদ ও আহত পরিবারে ১৩ লাখ টাকা অনুদান দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া সরকারিভাবেও শহীদ জুলাই স্মৃতি ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে তাদের সহায়তা প্রদান কার্যক্রম চলছে।
Leave a Reply