নতুন প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে নানা বিষয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। শনিবার যুক্তরাষ্ট্রের তিন সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল তিন দিনের সফরে ঢাকায় পৌঁছে। এদিন বিএনপির সঙ্গে বৈঠকের মাধ্যমে তারা আলোচনা শুরু করে।
ঢাকায় মার্কিন দূতাবাসের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সরকারের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক জোরদার করার উপায়, চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা, ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে অভিন্ন স্বার্থ সুরক্ষা নিয়ে আলোচনা হবে। এ ছাড়া যুব অধিকার কর্মী, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, শ্রমিক সংগঠক, অবাধ ও বিধি-নিষেধবিহীন মিডিয়ায় যুক্তদের সঙ্গে প্রতিনিধিদল বৈঠক করবে।
বাংলাদেশে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে নতুন সরকার গঠন হয়েছে। বিএনপির বর্জনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠিত নির্বাচন ‘অবাধ ও সুষ্ঠু হয়নি’ বলে মন্তব্য করেছিল যুক্তরাষ্ট্র। পরবর্তী সময়ে আনুষ্ঠানিক অভিনন্দন না জানালেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে চিঠি দিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে বিভিন্ন ইস্যুতে কাজ করার আগ্রহ জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। এরই মধ্যে দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু ওয়াশিংটনে উচ্চপর্যায়ের এক প্যানেল আলোচনায় সতর্ক করেছেন যে, মিয়ানমারের পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে। তার প্রভাব বাংলাদেশের ওপর পড়তে পারে। মার্কিন এই কর্মকর্তা শ্রীলংকার পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করেন। সেখান থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর বিষয়ে ভারতের সহায়তাসহ ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশলের কার্যকারিতা তুলে ধরেন। মালদ্বীপে চীনপন্থি সরকারের সঙ্গে কাজ করার বিষয়েও আলোকপাত করেন। তবে ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলে ভারতের সঙ্গে সহযোগিতাকেই বেশি জোর দেন ডোনাল্ড লু।
তিন সদস্যবিশিষ্ট প্রতিনিধিদলে আছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের দক্ষিণ এশিয়া আঞ্চলিক বিষয়ের জ্যেষ্ঠ পরিচালক আইলিন লাউবাচার, ইউএসএআইডি’র সহকারী প্রশাসক মাইকেল শিফার এবং মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক উপসহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী আফরিন আক্তার।
এদিকে বাংলাদেশ থেকেও শিগগিরই প্রতিনিধিদল যুক্তরাষ্ট্রে যেতে পারে বলে আভাস পাওয়া গেছে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ প্রথম সফরে যাবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
বাইডেন প্রশাসনের বাংলাদেশের সঙ্গে বিভিন্ন ইস্যুতে যুক্ত থাকার আভাস মিলেছে। ঢাকায় মার্কিন দূতাবাস বলেছে, বাংলাদেশের সঙ্গে অবাধ ও উন্মুক্ত ইন্দো-প্যাসিফিক নিয়ে অংশীদারিত্ব প্রতিষ্ঠায় যুক্তরাষ্ট্র বদ্ধপরিকর। এ ছাড়া বাংলাদেশে মানবাধিকার সুরক্ষা, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা, আন্তঃরাষ্ট্রীয় হুমকি মোকাবিলায় আঞ্চলিক সক্ষমতার উন্নয়ন এবং অর্থনৈতিক সংস্কারের উন্নয়ন ঘটানোর বিষয়েও যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের অংশীদার থাকবে বলে মার্কিন দূতাবাসের বিবৃতিতে বলা হয়েছে।
শনিবার বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে বৈঠকে মার্কিন প্রতিনিধিদল বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেছে। কারাগারে থাকা বিএনপির নেতাকর্মীদের বিষয়টিও আলোচনায় উঠে আসে। এছাড়াও, যুক্তরাষ্ট্র ভবিষ্যতেও বিএনপির সঙ্গে যুক্ত থাকার আশ্বাস দিয়েছে। বিএনপির তরফে বিভিন্ন অভিযোগ সম্বলিত নথি হস্তান্তর করা হয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বরাবরই সুশীল সমাজের জন্য স্পেস সৃষ্টির প্রতি জোর দিয়ে আসছে।
Leave a Reply