ইসরায়েলে যেসব লক্ষ্যে হামলা চালানো হয়েছে, তার সব কটিই পূরণ হয়েছে বলে দাবি করেছেন ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর চিফ অব স্টাফ মোহাম্মদ বাগেরি। তিনি বলেছেন, ইসরায়েল যদি এ হামলার জবাব না দেয়, তাহলে দেশটিতে আর কোনো হামলার পরিকল্পনা নেই তেহরানের।
ইরানের বার্তা সংস্থা তাসনিম নিউজের এক প্রতিবেদনে মোহাম্মদ বাগেরির এ বক্তব্য তুলে ধরা হয়েছে। গতকাল শনিবার রাতে ইসরায়েলের বিভিন্ন এলাকায় ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ইরান। দেশটির ভাষ্য, ১ এপ্রিল সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে ইরানি কনস্যুলেটে ইসরায়েলের বিমান হামলার জবাবে এ হামলা চালানো হয়েছে।
মোহাম্মদ বাগেরি বলেন, গতকাল কোনো বেসামরিক ও অর্থনৈতিক লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালানো হয়নি।
শুধু সামরিক স্থাপনাগুলো লক্ষ্য করা হয়েছে। বিশেষ করে হেরমন পর্বতে ইসরায়েলের একটি গোয়েন্দা ঘাঁটিতে হামলা চালানো হয়েছে। দামেস্ক কনস্যুলেটে হামলায় ওই ঘাঁটি জড়িত। নেগেভ মরুভূমিতে ইসরায়েলের নেভাতিম বিমানঘাঁটিতেও হামলা হয়েছে। সেখান থেকে ইসরায়েলের যুদ্ধবিমানগুলো কনস্যুলেটে হামলা চালিয়েছিল।
ইরানের হামলায় এই দুটি লক্ষ্যবস্তুই ‘উল্লেখযোগ্যভাবে ধ্বংস হয়েছে এবং সেগুলোকে নিষ্ক্রিয় করা হয়েছে’ জানিয়ে এই সামরিক কর্মকর্তা বলেন, গতকালের হামলার চেয়ে ‘১০ গুণ শক্তিশালী’ হামলা চালাতে সক্ষম তেহরান।
যুক্তরাষ্ট্রকে সতর্ক করেছে ইরান
মোহাম্মদ বাগেরির বক্তব্যের বরাতে তাসনিম নিউজ জানিয়েছে, ইসরায়েল চূড়ান্ত সীমা অতিক্রম করায় গতকাল হামলা চালিয়েছে ইরান। সতর্ক করে তিনি আরও বলেছেন, ইরানের এই হামলার জবাবে ইসরায়েল ‘অনেক বড় পরিসরে’ হামলা চালাতে পারে।
বাগেরি আরও বলেন, সুইজারল্যান্ড দূতাবাসের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে একটি বার্তা পাঠিয়েছে তেহরান।
তাতে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র যদি ‘এই অঞ্চলে নিজেদের ঘাঁটি ও সামরিক স্থাপনার মাধ্যমে জায়নবাদীদের আগ্রাসী পদক্ষেপের সঙ্গে জড়ায়, আর তা যদি প্রমাণিত হয়, তাহলে এ অঞ্চলে মার্কিন ঘাঁটি, স্থাপনা ও কর্মকর্তাদের কোনো নিরাপত্তা থাকবে না।’
গতকাল গ্রিনিচ মান সময় রাত আটটার দিকে ইসরায়েলি ভূখণ্ড লক্ষ্য করে বেশ কিছু ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ার কথা জানায় ইরানের রেভল্যুশনারি গার্ডস কোর (আইআরজিসি)। ইসরায়েলি ভূখণ্ড লক্ষ্য করে ইরানের প্রথম কোনো সরাসরি হামলা এটি।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, ইসরায়েল লক্ষ্য করে ইরান দুই শতাধিক কিলার ড্রোন, ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র এবং ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে। এর মধ্যে বেশির ভাগ ক্ষেপণাস্ত্রই যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটিশ বাহিনীর সহযোগিতায় সীমান্তের বাইরে থাকতেই প্রতিহত করা হয়েছে। ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলের একটি ঘাঁটিসহ কয়েকটি জায়গায় হামলা চালাতে সক্ষম হয়েছে ইরান। সেখানকার অবকাঠামোগুলোয় সামান্য ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
Leave a Reply