হোয়াইট হাউস বৃহস্পতিবার ঘোষণা করেছে, রাফায় ইসরাইলের স্থল-অভিযানের পরিকল্পনা আপাতত স্থগিত। ইসরাইল ও আমেরিকার কর্মকর্তারা এই পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনার জন্য বৈঠকের সময়সূচি পুনরায় নির্ধারণ করার কারণে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে যুক্তরাষ্ট্র জানিয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা-সংক্রান্ত যোগাযোগবিষয়ক উপদেষ্টা জন কারবি সংবাদদাতাদের বলেছেন, বাইডেন প্রশাসনের আশা, এই বৈঠক শেষ না হওয়া পর্যন্ত অন্তত রাফাতে কোনো হামলা হবে না।
তিনি বলেন, এই আলোচনার তারিখ ধার্য হয়নি।
গাজা ভূখণ্ডের দক্ষিণ প্রান্তের শহরে হামাস সদস্যদের নির্মূল করতে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু সরকারের অভিপ্রায় নিয়ে আলোচনা করতে যুদ্ধকুশলীদের একটি প্রতিনিধি দলকে ওয়াশিংটনে না পাঠানোর সিদ্ধান্ত বদলানোর পর এই বৈঠকের সম্ভাবনা জোরদার হয়েছে।
জাতিসঙ্ঘ নিরাপত্তা পরিষদে যুক্তরাষ্ট্রের ভোটদানে বিরত থাকার প্রতিবাদে নেতানিয়াহু সোমবার প্রতিনিধিদলের সফর বাতিল করেছিলেন। যুক্তরাষ্ট্র ভেটো না দেয়ায় ইসরাইল ও হামাসের মধ্যে চলমান যুদ্ধে অবিলম্বে বিরতির আহ্বান জানিয়ে প্রস্তাব পাস হয়। হোয়াইট হাউস বুধবার নিশ্চিত করেছে য, এই বৈঠকে পুনরায় বসতে রাজি হয়েছেন নেতানিয়াহু।
আমেরিকা-ইসরাইল দ্বিপক্ষীয় উত্তেজনা
বাইডেন প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তারা রাফাতে হামলার পরিকল্পনা ত্যাগ করতে ইসরাইলকে অনুরোধ করেছেন। রাফায় ১৪ লাখের বেশি ফিলিস্তিনি বেসামরিক মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন। হামাসের বিরুদ্ধে প্রায় ছয় মাসব্যাপী যুদ্ধে ইসরাইলের আচরণ নিয়ে দ্বিপক্ষীয় উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে।
চলতি সপ্তাহের শুরুতে ওয়াশিংটনে দুই দিনের বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন, ওয়াইট হাউসে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জেক সুলিভান ও সিআইএ পরিচারক উইলিয়াম বার্নস ইসরাইলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টকে বিকল্প খোঁজার অনুরোধ করেছেন, যাতে গাজায় বাড়তি ক্ষয়ক্ষতি এড়ানো যায়। ফিলিস্তিনিদের হিসাব অনুযায়ী, গাজা ভূখণ্ডে নিহতের সংখ্যা ৩২ হাজার ছাড়িয়েছে।
নেতানিয়াহু জোর দিয়ে বলেছেন, রাফায় না গিয়ে হামাসের বিরুদ্ধে ‘সার্বিক বিজয়’ অর্জন করা যাবে না। ইসরাইল বলছে, রাফায় হামাসের চারটি ব্যাটালিয়ন রয়েছে। এই ব্যাটালিয়নগুলোতে রয়েছে হাজার হাজার যোদ্ধা।
ইসরাইলপন্থী লবি গোষ্ঠী আমেরিকান ইসরাইল পাবলিক অ্যাফেয়ার্স কমিটিকে ভিডিও কনফারেন্স মারফত প্রধানমন্ত্রী মঙ্গলবার বলেছেন, ‘এই যুদ্ধ জিততে হলে রাফায় অবশিষ্ট হামাস ব্যাটালিয়নগুলোকে আমাদের অবশ্যই ধ্বংস করতে হবে।’
এদিকে, কাতার ও মিসরের মধ্যস্থতাকারীদের সাথে মিলিতভাবে যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তাদের ব্যাপক কূটনৈতিক চাপ সত্ত্বেও হামাসের হাতে আটক পণবন্দীদের মুক্তির বিনিময়ে যুদ্ধবিরতি নিয়ে কাতারে হওয়া আলোচনা স্থবির হয়ে রয়েছে।
সূত্র : ভয়েস অব আমেরিকা
Leave a Reply