গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে মাটি দস্যুরা কাটাখালি নদীর বেরি বাঁধ সহ নদির পাড় কেটে নিয়ে যাচ্ছে। এতে করে আগামী বর্ষা মওসুমে নদী উপছিয়ে বিশাল এলাকা বন্যার কবলে পড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। শুধু তাই নয় নদী পাড়ের মাটি ও বাঁধ কেটে নিয়ে যাওয়ায় পরিবেশের উপর মারাত্মক প্রভাব পড়বে বলে পরিবেশবিদরা জানিয়েছেন।
জানা গেছে, গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার মধ্যে দিয়ে বয়ে যাওয়া কাটাখালি নদীর ভাঙ্গনরোধ সহ আবাদি জমির ফসল রক্ষার জন্য নদির দক্ষিণ পাশ দিয়ে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ নির্মান করা হয়। বাঁধ নির্মাণের ফলে হাজার হাজার একর জমি ফসল বন্যার কবল থেকে রক্ষা পেয়ে আসছে।কিন্তু বেশ কিছুদিন থেকে উপজেলার তালুককানুপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও আওয়ামীলীগ নেতা আতিকুর রহমানের নেতৃত্বে একটি সিন্ডিকেট প্রতিদিন নদি পাড় ও বাঁধের মাটি কেটে নিয়ে যাচ্ছে। এ পর্যন্ত প্রায় শতাধিক বিঘার জমির উপরের মাটি, নদীপাড় ও বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাধের মাটি কেটে নিয়ে গেছে।
এ অবস্থায় নদিপাড়ের বাসিন্দাদের মাঝে চরম আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। তারা বিভিন্ন মহলে অভিযোগ করেও প্রতিকার পাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন। সরেজমিনে দেখা গেছে, কাটাখালি নদীর ফুলবাড়ি ইউনিয়নের সাবগাছি হাতিয়াদহ নামক স্থানে বোয়ালিয়া বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ১ হাজার মিটার বাঁধের মাটি কেটে নিয়ে গেছে। সেই সাথে ওই এলাকার জমির মাটি ও নদী পাড় কেটে নিয়ে গেছে মাটি দস্যুরা। এখনো প্রতিদিন ওই এলাকা থেকে মাটি ডাম ট্রাকে করে ৩০ হাজার ঘনফুট মাটি নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। যার বাজার মুল্যে ২৩ টাকা ঘনফুট হারে প্রায় ৭ লক্ষ টাকা।
ওই এলাকার লুৎফর রহমান জানালেন আমরা মনে হয় মগের রাজ্যে বসবাস করছি। তা নাহলে সরকার জনগণের জন্য যেখানে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ নির্মাণ করেছে কোটি কোটি টাকা খরচ করে সেই বাঁধই আবার ক্ষমতাসীন দলের নেতারা অবৈধভাবে কেটে নিয়ে যাচ্ছে। তিনি আরো জানালেন বর্ষা মওসুমে সামান্য বৃষ্টিতেই নদীর দুকূল উপচিয়ে হাজার হাজার বিঘা জমির ফসল তলিয়ে যাবে। সেই সাথে নদী পাড় কেটে নিয়ে যাওয়ায় নদি ভাঙ্গনের তীব্রতা আরো বেড়ে যাবে। এদিকে মাটি কাটার মুল হোতা আওয়ামী লীগ নেতা সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আতিকুর রহমান বলেন, টাকা দিয়ে কেনা মাটি তিনি নিয়ে যাচ্ছেন। এ মাটি তিনি ক্রয় করেননি অন্য এক ব্যক্তির ক্রয়কৃত মাটি পরিবহনে তিনি সহযোগিতা করছেন।
তবে আতিকের সহযোগী ছানোয়ার হোসেন ছানা জানালেন, সবাইকে ম্যানেজ করেই মাটি নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। জোর করে কিছুই করা হচ্ছে না।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার রাসেল মিয়ার সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, ব্যবস্থা নেয়ার জন্য এসিল্যান্ডকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
এসিল্যান্ডের সাথে কথা বললে তিনি জানান, আমরা অভিযান পরিচালনা করছি। কিন্তু দিনের বেলায় কাউকে পাওয়া যায়না । গভীর রাতে তারা এ অপকর্ম গুলো করে। এ ব্যাপারে হাইওয়ে পুলিশ ও থানা পুলিশ এনগেজমেন্ট হলে আসামীদের ধরা সহজ হতো। তবে আমাদের চেষ্টা আমরা অব্যাহত রেখেছি।
Leave a Reply