দেশ চালাচ্ছে ভারতের মদদপুষ্ট কিচেন কেবিনেট বেঈমানী করছে ড. ইউনূসের পেটিকোট সরকার

Reporter Name
    সময় : শনিবার, আগস্ট ৯, ২০২৫, ৩:২০ অপরাহ্ণ
  • ৫২৪ Time View
::   এফ শাহজাহান   ::
হাজারো শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত বাংলাদেশের দ্বিতীয় স্বাধীনতাকে নস্যাৎ করার নীলনকশা বাস্তবায়নে তোড়জোড় চলছে। এর মধ্যে বাংলাদেশকে ভারতের তাবেদার বানানোর সব আয়োজন প্রায় শেষ হয়েছে। এখন পর্দার আড়ালে থেকে দেশ চালাচ্ছে ভারতের মদদপুষ্ট ‘কিচেন কেবিনেট’। আর বাইরে শুধু মুখাভিনয় করছে ড.ইউনূসের পেটিকোট সরকার।
এই পেটিকোট সরকার চব্বিশের রক্তঝরা বিপ্লবের হাজার হাজার শহীদের রক্তের সঙ্গে বেঈমানী করে ইতমধ্যেই ঐতিহাসিক ‘জুলাই ঘোষণা; নামে একটি প্রহসন মঞ্চস্থ করেছে। এখন ‘জুলাই জাতীয় সনদ’ নামে আরেকটি নাটকের রিহার্সেল দিচ্ছে।
বাংলাদেশকে দ্বিতীয়বার স্বাধীন করার জন্য যারা অকাতরে জীবন বিলিয়ে দিয়েছেন আর যারা চিরতরে পঙ্গুত্ববরণ করেছেন, তাদের সবার মুখে লাথি মেরে ড.ইউনূসের পেটিকোট সরকার ইতমধ্যেই জুলাই ঘোষণাপত্রের নামে ‘জুলাই ষড়যন্ত্রপত্র ঘোষণা’ করেছে।
গত ৫ই আগস্ট ড. মুহাম্মদ ইউনূস ঘোষিত জুলাই ষড়যন্ত্রপত্রে বিপ্লবীদের কর্মকান্ডের কোন সাংবিধানিক বৈধতা না দিয়ে ফ্যা.সিবাদ বিরোধী আন্দোলনকারীদেরকে আওয়ামী জাহেলিয়াতের অগ্নিকুন্ডে নিক্ষেপের সব ব্যবস্থা পাকাপোক্ত করা হয়েছে।
জুলাই ঘোষণাপত্র নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় দলটির আমির ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের বলেন আমি মনে করি, জুলাইয়ের যে আকাঙ্ক্ষা এই ঘোষণাপত্রে সেটার তেমন কোনো প্রতিফলন হয়নি। একটা পাশ কাটিয়ে যাওয়ার মতো অবস্থা আমরা দেখেছি। এটা কোন তারিখ থেকে বাস্তবায়ন হবে কালকে থেকেই বাস্তবায়িত হবে সেটা কিন্তু স্পষ্ট করেনি। তা ছাড়া আমরা এটাকে সংবিধানে প্রিয়াম্বেলে চেয়েছিলাম, সেটা হয়নি।
খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা মামুনুল হক বলেছেন, ‘‘প্রধান উপদেষ্টার পাঠ করা জুলাই ঘোষণাপত্র, ঘোষণার আয়োজন এবং একটিমাত্র দলের সঙ্গে আলাপের ভিত্তিতে জাতীয় নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা—সবকিছুই প্রমাণ করে, ইসলামপন্থীদের মতামত, আত্মত্যাগ ও সাংগঠনিক ভূমিকাকে অবজ্ঞা করা হয়েছে।’’
অপরদিকে ‘জুলাই জাতীয় সনদ’ নিয়েও নানা টালবাহানা শুরু করেছে ড.ইউনূসের পেটিকোট সরকার। ‘জুলাই জাতীয় সনদ’প্রনয়নের মেয়াদ ফুরিয়ে আসলেও তা চূড়ান্ত করতে পারেনি।
ইতমধ্যেই জুলাই সনদ বাস্তবায়নের পদ্ধতি ও আইনি ভিত্তি নিয়ে বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মধ্যে গভীর মতপার্থক্যও দেখা দিয়েছে।
জামায়াতের কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক মতিউর রহমান আকন্দ বলেছেন, জুলাই সনদ কোনও একক দলের বিষয় নয়। কোন বিষয়ে যদি একমত হওয়া না যায়, কাদের জন্য একমত হওয়া গেল না, সেগুলোও সনদে উল্লেখ থাকবে। এই সনদ দ্রুত স্বাক্ষর করে ঘোষণা দিয়ে এর ভিত্তিতে নির্বাচন হতে হবে।
মতিউর রহমান আকন্দ আরো বলেন, ‘‘জুলাই সনদের যে সমস্ত বিষয়ে সবাই একমত, সেগুলো জাতির সামনে ঘোষণা করে হলেও দ্রুত সনদে স্বাক্ষর করিয়ে নির্বাচনের পূর্বেই এটিকে আইনি রূপ দিয়ে এর ভিত্তিতে নির্বাচনে যেতে হবে।’’
মতিউর রহমান আকন্দ বলেন, ‘‘একই ব্যক্তি একই সময়ে প্রধানমন্ত্রী ও সরকার প্রধান থাকতে পারবেন না। এখানে একটি জাতীয় দল একমত হচ্ছে না। তাহলে কী করা যাবে? সরকারকে এখানে সিদ্ধান্ত ঘোষণা করে দিতে হবে। জনগণের সমর্থন আদায়ে প্রয়োজনে গণভোট নিতে হবে। এই উদ্যোগ যদি সরকার না নেয়, তাহলে এটা সরকারের ব্যর্থতা। ’’
এনসিপি নেতা আরিফুল ইসলাম আদীব জানান, ‘‘নির্বাচনের পূর্বে জুলাই সনদকে আইনি, সাংবিধানিক ভিত্তি দিয়ে ওই সনদ অনুযায়ী পরবর্তী নির্বাচন হতে হবে। পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন, দলীয় পদে প্রধানমন্ত্রীর না থাকা, দুই সংসদের নির্বাচিত প্রার্থীদের গোপন ভোটে রাষ্ট্রপতির নির্বাচনের মতো কিছু বিষয়ে একমতে আসা না গেলে এনসিপি জুলাই সনদে স্বাক্ষর করবে না। কারণ, এটি আমাদের প্রধান দাবি। এটি শুধু স্বাক্ষরের বিষয় নয়। বাংলাদেশে এরকম শত শত কাগজে দলগুলো স্বাক্ষর করে। কিন্তু আইন ও জনগণের অভিমত দ্বারা বাস্তবায়নযোগ্য না হলে এটি কার্যকর হয় না।
এ বিষয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন ‘‘ আমরা সবসময় জুলাই সনদ নিয়ে আলাপ-আলোচনার জন্য রাজি। তবে কমিশন চূড়ান্ত জুলাই সনদ পাঠালে আলোচনা অনুযায়ী সবকিছু ঠিকঠাক থাকলেই কেবল বিএনপি তাতে স্বাক্ষর করবে। সাংবিধানিক সংশোধনীগুলো বাদে বাকী সকল সংস্কার প্রস্তাব এই সরকার এই সময়ের ভেতরেই বাস্তবায়ন করতে পারে কিন্তু সাংবিধানিক সংশোধনীগুলো বাস্তবায়নের বৈধ ফোরাম জাতীয় সংসদ।’’
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি আলী রীয়াজ বলেন, জুলাই সনদে যে সমস্ত জায়গায় ঐকমত্য হওয়ার, তা হয়েছে। এরপর আর এটা নিয়ে নতুন কিছু করার আমরা চেষ্টা করছি না। যেগুলো নোট অব ডিসেন্ট আছে। ওগুলো নিয়েই সনদ হবে।কমিশনের এখন পরবর্তী কাজ জুলাই সনদ বাস্তবায়নের পদ্ধতি নির্ধারণ করা। তবে দলগুলোকেই বাস্তবায়নের পথ খুঁজে বের করতে হবে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষক মহিউদ্দিন আহমদ বলেন,‘‘বিএনপি ধরে নিয়েছে, তারা সরকার গঠন করবে। তাই, সরকারে গেলে তারা যে বাধাহীন ক্ষমতার চর্চা করবে, সেখানে অন্তরায় হতে পারে, এমন কিছু প্রস্তাবের ব্যাপারে তারা আপত্তি জানিয়েছে। তবে বেশিরভাগ দল একটি যে জিনিস চাচ্ছে, শুধু বিএনপি তা চাচ্ছে না; এমন হলে জনগণের ধারণা হবে, বিএনপি সংস্কার চায় না।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved ©  doiniksatmatha.com